এক বছরের জন্য লকডাউনে যাবে ব্রিটেন!

allbanglanews24.com

প্রকাশিত : ০৪:৩৩ পিএম, ১৪ এপ্রিল ২০২০ মঙ্গলবার

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

মহামারি করোনায় যুক্তরাষ্ট্রে ২২ হাজার পেরিয়ে কিছুটা গতি কমেছে মৃত্যুর। স্পেনও দাবি করেছে, দৈনিক মৃতের সংখ্যা এখন কিছুটা কম। একই কথা জানাচ্ছে ইতালি, ফ্রান্সও। এর কারণে ইউরোপের কম ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো গৃহবন্দী থাকার বিষয়টি শিথিল করার কথা ভাবছে।

একমাত্র ব্রিটেন যে এতদিন বাসিন্দাদের গৃহবন্দী করার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছিল না, তারাই এখন দেশকে এক বছর বন্ধ রাখার কথা ভাবছে। প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে বিজ্ঞানবিষয়ক উপদেষ্টাদের বিশেষ বৈঠকে মিলেছে এমনই ইঙ্গিত।

করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় বরিস ‘সায়েন্টিফিক অ্যাডভাইজ়রি গ্রুপ ফর ইমার্জেন্সিস- এর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। এতে বরিস জানিয়েছেন, এতদিন বাসিন্দাদের ঘুরে-বেরানো, মেলামেশায় নিয়ন্ত্রণ তুলে নেয়ার কথা ভাবা হয়েছিল। তবে জাতীয় স্বাস্থ্য পরিষেবার শয্যা এক এক করে পূর্ণ হওয়ার পর এবং মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়ানোর পরে নতুন করে ভাবছে ব্রিটিশ প্রশাসন।

বরিস স্পষ্ট জানিয়েছেন, পাব ও রেস্তোরা বন্ধ না করলে দেশে সংক্রমণ ঠেকানো যাবে না। ব্রিটেনের বিশেষজ্ঞরাও আপাতত স্কুল-কলেজসহ যে কোনো ধরনের জমায়েত দীর্ঘ মেয়াদীভাবে বন্ধ রাখার উপরে জোর দিচ্ছেন। বন্ধ রাখা হবে বাজার-দোকানও। তাতে দরিদ্র পরিবারগুলো কঠিন আর্থিক পরিস্থিতিতে পড়লেও কোনো উপায় নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকার যদি বিষয়টিতে গুরুত্ব দেয়, তবেই দেশের মানুষ এর গুরুত্ব বুঝবে।

বাসিন্দাদের দীর্ঘ তিন মাস গৃহবন্দী রাখার পরে অবশেষে একটু স্বাভাবিক হতে শুরু করেছিল চিনের হুবেই প্রদেশ। তবে জানা গেছে, সেখানে নতুন করে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে। দেশটিতে গত কয়েক সপ্তাহে এই প্রথম একদিনে ১০৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন।

দ্বিতীয় পর্যায়ের এই সংক্রমণ সম্পর্কে বেজিংয়ের দাবি করেন, আক্রান্তরা সবাই বিদেশফেরত। তাদের থেকেই কিছু স্থানীয় সংক্রমণ ছড়িয়েছে।

এদিকে দীর্ঘকাল লকডাউনের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নিয়ে আজ আশঙ্কা প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জ। তাদের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-র কথায়, এখনো সুপারমার্কেটে খাবার মজুত রয়েছে। তবে যা পরিস্থিতি, তাতে শীঘ্রই খাদ্য সরবরাহের শৃঙ্খলে ভাঙন ধরবে। কারণ চাষি, কৃষি ব্যবস্থা, সেই সঙ্গে যুক্ত কারখানা, জাহাজ পরিবহন, বড় থেকে ছোট ব্যবসায়ী পুরো পদ্ধতিটাই ভেঙে পড়বে।

প্রসঙ্গত, বিশ্বজুড়ে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা এখন ১৯ লাখের উপরে। মৃত্যু ১ লাখ ১৯ হাজার ছাড়িয়েছে। ইউরোপে সবচয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে ইতালিতে। ২০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণ যাওয়ার পরে এ দেশে মৃত্যুহার কিছুটা কমেছে। স্পেনে মারা গেছেন ১৭ হাজার ৭৫৬ জন। ফ্রান্সে সংখ্যাটা ১৪ হাজার ৯৬৭। কিন্তু ব্রিটেনে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিন রাত আইসিইউতে কাটিয়েছেন। রোববার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে স্বাস্থ্যকর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেছেন, আমি তাদেরকে ধন্যবাদ দিয়ে শেষ করতে পারবো না। আমার জীবন বাঁচানোর জন্য আমি তাদের কাছে ঋণী।

সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা