করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত শনাক্তের ৫২% ঢাকার বাসিন্দা

allbanglanews24.com

প্রকাশিত : ০৭:৫৫ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০২০ শনিবার

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

আইইডিসিআর এর পরিচালক মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা বলেছেন,বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে এ পর্যন্ত শনাক্ত ৪৮২ জনের মধ্যে ৫২% মানুষের বসবাস ঢাকা মহনগরীর বাসিন্দা। এরপরেই নারায়নগঞ্জের অবস্থান।

আজ শনিবার শনাক্তদের মধ্যে ১৭ জনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে। এছাড়া ১৫ জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে।

এছাড়া নতুন করে যারা শনাক্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে ১৪ জনই ঢাকার বাসিন্দা এবং ৮ জন নারায়নগঞ্জ জেলার।

ঢাকার মধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে মিরপুর ও বাসাবো এলাকা।

করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এই তথ্য জানিয়েছেন।

বাংলাদেশে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে ৫৮ জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। মারা গেছেন তিন জন।

বিগত কয়েক দিনের চেয়ে করোনাভাইরাসে শনাক্তের সংখ্যা কমেছে। গতকালের তুলনায় মুত্যুর সংখ্যাও কম।

মোট ৯৫৪টি নমুনা পরীক্ষা শেষে ওই ৫৮জনের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।

গত ২৪ ঘণ্টায় যে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে তাদের মধ্যে একজন ঢাকার এবং দুজন ঢাকার বাইরের বাসিন্দা । তাদের বয়স ৩৮, ৫৫ এবং ৭৪ বছর।

নতুন করে সুস্থ হয়েছেন আরও তিন জন। এ নিয়ে সুস্থ হয়ে ফিরে গেছেন মোট ৩৬ জন।

সব মিলিয়ে বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৮২ জনে। আর মোট মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ জনে।।

শনাক্ত ৫৮ জনের মধ্যে ৪৮ জন পুরুষ এবং ১০ জন নারী।

বাংলাদেশে এ পর্যন্ত যতজন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তাদের মধ্যে ২২% শতাংশের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে।

এছাড়া ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যে আক্রান্তের হার ১৯%। এবং ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সীদের আক্রান্তের হারও ১৯ ভাগ।

মোট আক্রান্তের ৭০ ভাগই পুরুষ, এবং ৩০ ভাগ নারী।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে ঢাকার তিনটি স্থানে সাড়ে চার হাজার শয্যার ব্যবস্থা করার কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।

এছাড়া আরও কয়েকটি সরকারি হাসপাতাল এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে করোনাভাইরাস চিকিৎসার আওতায় আনার কথা তিনি জানান।

সামনের দিনগুলোকে জেলা-উপজেলা পর্যায়ের কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে নমুনা সংগ্রহের পরিধি সম্প্রসারণের কথা জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক আবুল কালাম আজাদ।

এজন্য প্রায় ১৪ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে যারাই এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থাকবেন তাদের নিরাপত্তার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যক্তিগত সুরক্ষা সরঞ্জাম- পিপিএ সরবরাহ করার কথা জানানো হয়েছে।

তবে এখনও অনেক মানুষ ঘরে থাকার সরকারি নির্দেশনা মানছেন না উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, নারায়নগঞ্জের অনেক বাসিন্দা দেশের অন্যান্য জেলায় গিয়ে ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে দিচ্ছে।

এমন অবস্থায় সংক্রমণের সংখ্যা আবারও বেড়ে যেতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

৮ই মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাস আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়। প্রথম মৃত্যুর খবর আসে এর দশদিন পর অর্থাৎ ১৮ই মার্চ।

এরপর তিন সপ্তাহের বেশি সময়ে ১০০ জনের কম রোগী শনাক্ত হয়েছে বাংলাদেশে।

কেবল একটি সংস্থার অধীনে করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা এবং যথেষ্ট পরিমাণ পরীক্ষা না করার কারণে ঐ সময় কোভিড-১৯ রোগী শনাক্ত হয়নি বলে সমালোচনার মুখে পড়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

এরপর গত কয়েকদিন ধরে পরীক্ষার পরিমাণ বাড়ানোর পর প্রতিদিনই করোনাভাইরাস শনাক্ত হওয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।

এর আগে মার্চ মাসের শেষদিকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা বিভাগ জানায় যে বাংলাদেশে সীমিত আকারে কমিউনিটি ট্রান্সমিশন বা সামাজিক সংক্রমণ হচ্ছে।

বুধবার আইইডিসিআর পরিচালক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা বিবিসি বাংলাকে বলেন, বাংলাদেশ এখন সংক্রমণের দিক থেকে তৃতীয় ও চতুর্থ স্তরের মাঝামাঝিতে রয়েছে।

ভাইরাসটি কমিউনিটিতে ছড়িয়ে পড়লেও সেটা এখনও ক্লাস্টার আকারে রয়েছে।